Friday, September 10, 2021

thumbnail

একজন চাশমিস এর সাথে কথোপকথন


 

একজন চাশমিস এর সাথে কথোপকথন

আমি ভার্সিটি বাসে ১০ মিনিটস আগে উঠে বসে আছি।তখনও কেউ আসেনি।বাসের স্টাফ মামারা দোকানে বসে চা খাচ্ছে।

একটু পরেই একটা মেয়ে উঠল।

বলল--ভাইয়া, আপনার সাথে কি একটু কথা বলতে পারি।

আমি:কেন নয়?

চাশমিস:আপনি কোন ইয়ার ভাইয়া?

আমি:ফার্স্ট ইয়ার।ফিশারিজ ডিপার্টমেন্ট।

চাশমিস: আচ্ছা।(হাসি) আমি সাম্মি।হিস্টোরি ডিপার্টমেন্ট।নাম কি আপনার?

আমি:রাকিব।

সাম্মি:বাসা কোথায় ভাইয়া?

আমি:এইতো  এখান থেকে কিমি।

সাম্মি:এতদূর থেকে ক্লাসে আসেন?

আমি:হ্যা। দুপুরে ক্লাস শেষ হয়তো।তাই আর কি।

তাছাড়া অনেকদিন পর Continueslly  বাড়িতে থাকার সুযোগ হল।

সাম্মি: আচ্ছা। আমার বাসা, এখান থেকে পাঁচ মিনিটের পথ।।

আমি:যাক ভালই হল-এদিক থেকে মোটামুটি অনেক স্টুডেন্ট পড়ে।

সাম্মি:হ্যা।(হাসি) ভাইয়া কোথায় পড়তেন?

আমি:সরকারি বিজ্ঞান কলেজ,তেঁজগাও,ঢাকা।

আপনি?

সাম্মি:আমি গাজীপুরে পড়েছি।

ভাইয়ার স্কুল কোথায় ছিল?আমার (....)

আমি:আপনাদের উপজেলাতেই  তেই।আপনাদের স্কুলে আমাদের SSC  পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছিল।

--আপনাকে মনে হয় সেদিন দেখেছি লোকাল বাসে দুপুরবেলা।

সাম্মি:হ্যা।আমিও আপনাকে দেখেছিলাম।

আমারও দুপুরে ক্লাস শেষ তাই চলে আসি।দুপুরবেলায় একটা ভার্সিটি বাস থাকলে অনেক ভাল হত।

আমি:হ্যা।তা অবশ্য ঠিক। আচ্ছা আপনার না ইনস্টিটিউট ক্লাস হয়?আর আপনারা তো হিস্টোরি ফাস্ট ব্যাচ।তাই না?

সাম্মি:হ্যা।

আমি:আমার ক্লাস তো ওখানেই হয়।আপনাকে তো একদিনও দেখি নাই।

সাম্মি:আমিও আপনাকে ইনস্টিটিউট দেখি নাই।তবে মেইন ক্যাম্পাসে অনেকবার দেখেছি।

আমি:যাক ভালোই।

আর শোনো --আপনি করে বলার দরকার নেই।

তুমি করে বললেই হবে।সেইম ব্যাচ তো।

সাম্মি :জ্বী ভাইয়া।(হাসি)

--------------------

#১ম অংশ ঘটে যাওয়ার পর অনেকদিন আর পরস্পরের  সাথে দেখা হয়না।

শত ব্যস্ততার মধ্যের একটা দিন।আমার(রাকিবহঠাৎ বিকাল ২টায় একটা স্পেশাল কম্পিউটার  ক্লাস পড়ে যায়।ল্যাব ক্লাস। উপস্থিত না থাকলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে আর কি।

সুতারাং ক্লাস করলাম।ক্লাস শেষ করে বিকাল :১০ এর ভার্সিটির বাসে গিয়ে বসলাম।গাড়ি রৌদ্রে দাড়িয়ে আছে।তখন কেউ আসেনি। বাস ছাড়তে আরও ৪০ মিনিটস বাকি।

বসে বসে এলিটার "চোখের নীলে আকাশ একো" গানটা শুনছি।এটা এমন একটা গান,যেটা বারবার শুনলেও খারাপ লাগেনা।

কিছুক্ষন পর,বাসের তখনও ২০ মিনিটস বাকি।

তখন অনেকই সিটে ব্যাগ রেখে চলে গেছে।

গরমের তীব্রতা একটু বেশিই।মাঘ মাসের পরে ফাল্গুন মাসেই তীব্র গরম,প্রখর রৌদ্র।

এসব কথা যখন ভাবছিলাম।ঠিক তখন সেই চাসমিস সাম্মি অনেকটা হাপিয়ে বাসে উঠে।

উঠেই আমাকে দেখতে পেয়ে --কেমন আছেন ভাইয়া?

আমি:আবার আপনি?

ভালো।তুমি কেমন আছো?

সাম্মি:জ্বি ভাল।(হাসি)

--আমি বাম পাশের সারিতে জানালার পাশে বসা ছিলাম।

সাম্মি ডানপাশের সারিতে বসতে গেল।

আমি বললাম -বামপাশে বসো।ওপাশে রোদ তোহ।

সাম্মি আমার সিটের সামনের সিটে বসল।বসেই আমার দিকে ঘুরে কথা বলতে শুরু করল।

--ভাইয়া, আপনাকে কিন্তু এই কয়দিন একবারও দেখলাম না।

আমি-- আচ্ছা। আসলে ক্লাস নিয়ে একটু বেশিই ব্যস্ত থাকতে হয়।।।তাছাড়া তোমাকেও তো সকালে ভার্সিটির বাসে একবারও দেখলাম না।"হল" উঠে গেছো নাকি?

সাম্মি--না ভাইয়া।মেসে উঠেছি।ক্লাস একটু বেশিই।বাড়ি থেকে এসে ক্লাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।

আজকে বিকালে হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। উঠে দেখি বাসের জন্য সময় বেশি নেই।তাই অনেকটা ছুটে চলে এসেছি।

আমি:-- আচ্ছা।বাসা কোথায় নিয়েছো?

সাম্মি--শহরের দিকে।বাড়ির জন্য খারাপ লাগছিল।তাই যাচ্ছি। আবার কাল সকালের বাসে ভার্সিটিতে ফিরবো।

আমি--ওহ।তবে বাড়িতে কম যাওয়া ভাল।লেখাপড়ার ক্ষতি হয়।

(অবশ্য আমি বাড়ি থেকেই ক্লাস করি।আমরা এমনই সুযোগ পেলেই উপদেশ দিতে ভুল করিনা)

----বাসে আর কোন কথা হয় না।দুজনেই জানালা দিয়ে বাইরের বসন্তের নতুন প্রকৃতি দেখতে দেখতে চলে আসে।

বাস থেকে নির্দিষ্ট সময় পরপর অনেকে নেমে যাচ্ছে।

অবশেষে বাস নির্দিষ্ট স্টেশন, শেষ গন্তব্যে বাস চলে আসল।

আমি আগেই নেমে গেলাম। অপেক্ষা করছি চাসমিস এর জন্যে।

চাসমিস নামল।

আমি--আচ্ছা তুমি কি গত সপ্তাহে বাড়িতে আস নাই?

সাম্মি :না ভাইয়া।শুক্রবার পেজেন্টেশন ছিল।তাই আসতে পারি নাই।

আমি-- আহারে! শুক্রবার প্যারা।গত সপ্তাহে আমারও শুক্রবার আর শনিবার ক্লাস ছিল।

সাম্মি--হুমম(হাসি)!আচ্ছা ভাইয়া ভাল থাকবেন।

আমি--হ্যা।তুমিও।

তারপর দুজন দুজনের গন্তব্যের দিকে চলে গেলাম।কারন পরবর্তী পথ আমাদের  ভিন্ন।

*--*সাম্মি আমাকে তুমি করে বলতেই পারছেনা।কেমন যেন অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।এর কারন হয়ত আমাকে একটু সিনিয়র মনে হয়।

না হয় অন্য কিছু।

----পরদিন সকালবেলা। নির্দিষ্ট জায়গায় বাস এসে দাড়িয়ে আছে।বাসের অদুরে একটা টুলের মত কিছু একটা রাখা, সেখানে বসে আছে সাম্মি।

হয়ত বা আমার জন্য অপেক্ষা করছিল।

আমাকে দেখেই --কেমন আছেন ভাইয়া।

আমি--(হেসে হেসে) ভাল।তুমি কেমন আছো?

সাম্মি--ভাল।

আমি-- বাসে চলে আস।আর মাত্র ১০ মিনিটস বাকি।

সাম্মি--(হাসি)

--বাসে উঠে দেখি সিট গুলোতে কুয়াশার বিন্দু জমে আছে।যদিও এখন চৈত্র মাস।কিন্তু ভোর রাতে শীতের সাথে কুয়াশাও পড়ে খানিকটা।

একটা কাপড় দিয়ে মুছে নিলাম সিট।(যে কাপড়টা বাসেই থাকে সিট মোছার জন্য)

এরই মধ্যে অন্য একটা মেয়ে উঠে আরেকটা সিট মুছে নিল।

তারপর সাম্মি উঠল, সাথে একটা এক্সট্রা ব্যাগ। হয়তো আন্টি খাবার বা প্রয়োজনীয় অন্যকিছু দিয়ে দিয়েছে।

কারন আমার "মা" এবং "আপু" আমার সাথে এরকমই করতো যখন আমি ঢাকা ছিলাম।

সাম্মি আমার থেকে সারি সামনের সিটে বসল।

আমি পিছনে দাড়িয়ে আছি।তখনও বসিনি।সামনের দিকের সিটগুলো আমরা মেয়েদের জন্য রেখে দিই।এটা আমাদের ভার্সিটির একটা কালচার বলা যেতে পারে।

তখন সাম্মি আমার দিকে ফিরে বলল--ভাইয়া আপনার ফেসবুক একাউন্টের নাম কি?(আমি তখন মেসেঞ্জার চেক করছিলাম। কারন কাল রাতের পরে আর চেক করা হয়নি,কয়েকটি গ্রুপের কিছু কাজ থাকে, মেসেঞ্জারে সেটা জানিয়ে দেয়।তাই সকালে আর রাতে নিয়মিত চেক করতেই হয়)

আমি বললাম-- হ্যা। আছে তোহ।

সাম্মি--আচ্ছা ভাইয়া,আপনি আমার একাউন্ট সার্চ দেন।(হয়তবা আমাকে নাম্বার দেয়ার ধান্ধা)

আমি ফেসবুকে লগ ইন করলাম।সার্চ বাটনে টিপে ওর হাতে ফোন দিলাম।

সাম্মি নাম্বার দিয়ে সার্চ দিল।নাম্বার একাউন্ট দুটোই দৃশ্যমান। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট না দিয়ে আমার হাতে দিল।

আমি রিকোয়েস্ট পাঠালাম।

কিন্তু ব্যাক বাটনে চেপে আসতেই নাম্বারটা মুছে গেল।

তারপর বাস ছাড়ার আগ পর্যন্ত ১০ মিনিটস  মেসেঞ্জারেই থাকলাম।

বাস ছাড়ল।ফেসবুকে ঢু মেরে বের হতে গেলাম।

দেখলাম নোটিফিকেশন --Shammy Akter accepted your friend request.

৪০ মিনিটস পর বাস শহরে আসল।সাম্মি নেমে গেল। বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ক্লাসে আসবে।

আর আমি বাসে করে চলে যাই ভার্সিটিতে।

এরপর আর কথা হয়না।

-----------------------------------

###চাশমিশ--(পার্ট -০২)

অনেক দিন ধরে আর গল্প লিখি না।কারন প্রতিটি গল্প লেখার পর গল্পের শেষ অংশের তিক্ততা গল্পের নায়কের সাথে সাথে আমারও মন খারাপ করে দিচ্ছিল।

তা যারা "অনেকটা রাধা কৃষ্ণের মত" গল্প পড়েছেন, তারা জানেন।

***হামিদ ভাইয়ার Seriousness আর সাব্বির ভাইয়ার অনুরোধে গল্পটা শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

যাহোক শুরু করি........

ব্যস্ততা বেড়ে যাচ্ছিল খুব মিডটার্ম সামনে, পড়াশুনার চাপটা একটু বেশী। আগের ঘটনা শেষ হওয়ার পরের সপ্তাহ--- গত দুই দিন ধরে বার বার সাম্মি ফেবু একাউন্টে যাচ্ছিলাম।কিন্তু sms দিতে পারছিলাম না।প্রতিবার লেখাটা পড়ি- You & Shamny akter connected on messenger.

আর ভাবতে থাকি আসলেই Connected হতে পেরেছি কিনা?

এর আরো দিন পর বিকেল প্রায় টার দিকে প্রাকটিকাল লেখার ফাকে ডাটা অন করলাম,

একটা sms আসল---Hi.....!

ঘন্টা আগে দিয়েছিলো।তবে এখন অনলাইনে আছে।কথা হল কিছুক্ষণ।

আমি তখন কি করছিলাম সেটা বললাম,আর সে বলল -সে তখন বান্ধবীর সাথে বাড়ির পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এরপর পহেলা বৈশাখ এল,এই টপিক নিয়ে কথা হল, ভার্সিটি প্রোগ্রাম নিয়েও কথা হল।

তবে সে কন্টিনিউয়াসলি আমাকে আপনি বলো যাচ্ছিল।আমি বললাম -আমরা যেহেতু বন্ধু,আপনি বলাটা ভাল দেখায় না,আমাকে তুই অথবা তুমি করে বলবেন।

সাম্মি-- তুই একটা বোকা ছেলে।

আমি- বাব্বা!! একবারে এতো চেন্জ?

সাম্মি -- না থাক, তুমি করে বলি।

আমি --আচ্ছা।

ঈদ উল ফিতরের ছুটি হয়ে যায়।

লম্বা ছুটির পর দুজনেরই সেমিস্টার ফাইনাল শুরু হয়ে যায়।তাই ব্যস্ততায় যোগাযোগে ভাটা পড়ে।

ঈদেরছুটিরর পর---- ভার্সিটি বাসে আবার দেখা-

সাম্মি-- কেমন আছেন,ভাইয়া?

আমি-- আলহামদুলিল্লাহ, ভাল, আপনি কেমন আছেন?

সাম্মি-- আলহামদুলিল্লাহ্ (ফোনটা এগিয়ে দিয়ে)

ভাইয়া, আপনার Contact number টা দিন।

আমি নাম্বার দিয়ে বললাম-- একটা কল করেন,সেভ করে রাখি।

রাতের বেলা-- sms ----

আমি-- এত আপনি আপনি করেন কেন হ্যা??

সাম্মি-- সরি ভাইয়া,,, আপনাকে আপনি করে ছাড়া বলতে Uneasy লাগে।চেস্টা করেছি। But failed.

(এটার কারন হয়ত- সে আমার চেয়ে বছরের ছোট,সে ফার্সটাইমে আমাদের ভার্সিটি তে চান্স পেয়েছে।আর আমি তো  সেকেন্ড টাইমার ছিলাম।)

আমি-- তাহলে আমিও 'আপনি' করেই বলব।

সাম্মি - না, ভাইয়া। আপনি আমাকে তুমি করেই বলেন।

এরই মধ্যে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়।

কয়েকদিনের মধ্যেই ঈদ-উল আযহা ' ছুটি হয়ে যায়।

ঢাকার বাইরে অনেকদিন থাকার কারনে আমার বড়আপুর জন্য খারাপ লাগছিল।তাই এই ছুটিতে তাদের ওখানে বেড়াতে যাই।সাথে সাথে একটু ডাক্তারও দেখিয়ে আসি, শরীরের অবস্থা খারাপ ছিল।

ঢাকা থাকাকালীন সময়ে বিষয়টাকে প্রথমে খুব ভাবছিলাম,কিন্তু ঢাকার ব্যস্ত নগরী আমাকেও ব্যস্ত করে দিল।

প্রায় ১৫ দিন পর ঢাকা থেকে ফিরলাম।

হঠাৎ করে সেদিন দেখা হল।

কথা বলতে সংকোচ বোধ করছিলাম।

সাম্মি এগিয়ে এসে-- কেমন আছেন ভাইয়া??

আমি--ভাল।আপনি??

সাম্মি-- ভাল।পরীক্ষার রুটিন দিয়েছে ভাইয়া??

আমি--না,কোর্স এখনও কমপ্লিট হয়নি।

সাম্মি-- ওও,আমাদের ১৮ তারিখ পরীক্ষা।

আমি-- আচ্ছা। Best of luck.

সাম্মি--Thank you vaiya.

কথা বলার সময় কেমন যেন feel হয়,বুকের মাঝে কেমন যেন করে।তবে সময় ডোপামিন হরমোন বা Feel good hormone ক্ষরণ হওয়ার ফলে অনেকটা সুখ অনুভুত হয়।

তার মাঝে আমি কিছুই লক্ষ করতে পারি না।

ছোট্ট বন্ধু নোমান এর কাছ থেকে মন চোখ Read করার মত ট্রিকস শিখেছিলাম।

তবে এক্ষেত্রে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ হয়েছি।

এভাবেই কেটে গেল আরও একটি মাস।

একদিন Imo তে sms কথা হল।

কুশলাদি জানা হল।

আমাদের ডিপার্টমেন্টের ক্লাসরুম টা বন্ধু-বান্ধবীরা সাজালো, হঠাৎ তার কথা মনে হওয়াতে ভাবলাম, ক্লাসরুমের ছবিগুলো তাকে দিই।

মেসেঞ্জারে Search করে তার Profile picture  দেখে থমকে গেলাম।প্রোফাইল চেনা যাচ্ছিল না।

কনভারসেশন দেখে শিউর হলাম এবং ছবি পাঠালাম। কথা হল কিছুক্ষণ।

একটু কাজ ছিল, সেরে এসে তার প্রোফাইলে গেলাম।তার আগের কোন ছবি পেলাম না।তাছাড়া মাত্রা দুটো আংশিক ছবি(চোখ,চুল) এসব দেখা যাচ্ছিল।

আমার কাছে অবশ্য তার ছবি আছে কয়েকটা।

আর সবচেয়ে আশ্চর্য  ব্যাপার হল-আমার সামনে Add friend এর Option।। আমি অবাক হলাম। সে আমাকে  Unfriend করেছে, ব্যাপারটা বিশ্বাস হচ্ছিল না।

টেনশন হচ্ছিল-কেন আমাকে Unfriend করলো।

আমি তো তাকে মেসেঞ্জার,ইমো,ফোনকল,এসএমএস কোন কিছুতেই বিরক্ত করি নাই।।

নিজেকে ছোট মনে হতে লাগলো।

ব্যাপারটা কে Easy করতে রাতে ডায়েরী লিখলাম।

পরের সপ্তাহে আবার দেখা হল শহরে। কিন্তু কথা বলতে খারাপ লাগছিল। তবুও সাম্মি এসে বলল--

ভাইয়া, আপনাকে চিনতে পারছিলাম না দুর থেকে।

(আমি সানগ্লাস পড়া ছিলাম)

আমি-- ওহ।আসলে সানগ্লাস পড়লে অন্যরকম লাগে তো।

তারপরের বাসে উঠলাম।

কিন্তু কথা বলে মজা পাচ্ছিলাম না।

৪০ মিনিটে দুজনে মাত্র মিনিটের বেশি কথা বলি নাই।তাও সাম্মি বেশি কথা বলেছে।পরবর্তী মাস লেখাপড়া তে খুবই ব্যস্ত সময় কাটালাম। যার কারনে নিজের অনিচ্ছায় সাম্মিকে Ignore করা হল।আগে যে অল্প একটু খোজ খবর নিতাম,তাও আর হয়ে ওঠেনা।আসলে সেমিস্টার বেস পড়াশুনায় ঝামেলায় থাকতে হয়।সাম্মিকে প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। একদিন সাম্মির Incoming call ভেসে উঠল মোবাইল স্ক্রিনে।

সাম্মি আমাকে ভার্সিটির lake park আসতে বলল।

পাশাপাশি বসলাম।ভবিষ্যৎ এর গল্প করতে গিয়ে অনেক কথাই হল।

প্রশ্ন করলাম-- ভাইয়া(ভাই+ইয়া) কোথায় পড়ে ??

সাম্মি চুপ করে থাকলো।বুদ্ধিমতি সাম্মি সহজেই আমার প্রশ্নের মর্ম বুঝতে পারল।

বলল-- আমার বাবা সরকারী চাকরিজীবি। তার ইচ্ছে আমি তার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করি।

কিন্তু আমি চাই আমার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে।পড়াশোনা শেষ করে কিছু করতে।

প্রায় মিনিট খানেক পরে, ফুপিয়ে কান্নার শব্দ পেয়ে দেখি সাম্মির চশমার ফাঁকা দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।

ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। কি বলব, কিছুই মাথায় আসছিল না।

তাই আবার সামনের লেকের পানিতে ঢেউ দেখছিলাম।

তার একটু পর বিদ্যুৎ চমকে চমকিয়ে উঠলাম।।

আমার ডান হাতটি সাম্মি ধরে ফেলেছে।

আমি যেন বিদ্যুৎ এর 220volt এর শক খাচ্ছি।

প্রথম কোন মেয়ের স্পর্শ।

তার একটু পরে বলল---

বাড়ির এই শাসন আর ভাল লাগেনা।সব বাধা ভাঙ্গতে চাই।মা-বাবাসহ পরিবারের সবাই খুব নজরে রাখে।আমার যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে।

আমি-- নিশ্চুপ

সাম্মি--আমি জানি, তোমার মনের কথা।তোমাকে ভুলে থাকার জন্য তোমাকে Unfriend করেছিলাম।

কিন্তু তুমি শুধু আমার ফেসবুক একাউন্টে কেন কানেক্ট থাকবে,তুমি তো আমার জীবনের সাথে কানেক্ট থাকবে সবসময়।

লক্ষ্য করেছি সেই প্রথম থেকেই।তোমার সাথে কথা বললে নিজেকে খুব সুখী মনে হয়।হারিয়ে যাই সুখের রাজ্যে।তোমার কাছে আমাকে একটু রাখতে পারবে বাকি টা জীবন।

আমার চোখও ছলছল করছিল।তার দিকে তাকিয়ে শুধু একবার দুচোখ বন্ধ করলাম।

সাম্মি আমার ঘাড়ে মাথা রাখল পরম আদরে।

যেন সে এক পরম শান্তির জগতে ফিরে এসেছে।

(সমাপ্ত)

# ঘটনাটি সম্পুর্ন কাল্পনিক।

#So Don't be serious.

#রাকিব হাসান জুয়েল.

 

 

About

Search This Blog

Powered by Blogger.

একজন চাশমিস এর সাথে কথোপকথন

  একজন চাশমিস এর সাথে কথোপকথন আমি ভার্সিটি বাসে ১০ মিনিটস আগে উ...